জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এর (৬১/২০৩) সভায় ২০১০ সালকে আন্তজার্তিক প্রাণবৈচিত্র্য বর্ষ ঘোষণা করা হয়। খুব সাধারণভাবে প্রাণবৈচিত্র্য বলতে আমাদের চারপাশের দৃশ্য, অদৃশ্য সকল প্রাণকে বুঝায় । মানুষের জীবন ধারণের জন্য খাদ্য থেকে দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহার্য প্রত্যেকটি দ্রব্যের জন্য প্রাণবৈচিত্র্যের উপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়। কিন্তু ক্রমবর্ধমান পরিবেশ দূষণের কারণে পৃথিবীর প্রাণবৈচিত্র্যের একটি বিশাল অংশ আজ হুমকির মুখে। তাই এখন উচিত আমাদের যাবতীয় পরিবেশ দূষণ বন্ধ করা কিংবা বন্ধ করার জন্য সোচ্চার হওয়া।
আমারা প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় প্রত্যেকেই কিছু না কিছু ভূমিকা রাখতে পারি। অনুসন্ধিৎসু চক্র প্রাণবৈচিত্র্য বাঁচাতে সাধারণ কিছু কাজের তালিকা করেছে। প্রাণবৈচিত্র্য বাঁচাতে আমরা যে কেউ নিচের যে কোন একটি চর্চা শুরু করতে পারি আমাদের নিজেদের জীবনে। অনেকে হয়তো বলবেন ব্যক্তিগত এই চর্চা সমাজে কতটুকু পরিবর্তন আনতে পারবে। কিন্তু আমাদের এই চর্চা যে একদিন চারদিকে বিস্তার লাভ করবে না, তা কে বলতে পারে ? তাই এখনই শুরু করতে পারেন নিচের ন্যূনতম একটি অথবা একাধিক চর্চা। নিজের চর্চার পর তা পরিবারের অন্যদের চর্চার আহ্বান জানানো।
১. প্রাণবৈচিত্র্য কি তা জানা, পরিবারের সবাইকে জানানো; প্রতিবেশীদের, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের জানানো, কর্মস্থলে জানানো; কর্মস্থলে, সংগঠনে আলোচনা করা। যত বেশি মানুষকে সম্ভব, এটা জানানোর জন্য সচেষ্ট হওয়া ।
২. পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ব্যবহারে যথাসম্ভব মিতব্যয়ী হওয়া। অন্যদের আহ্বান জানানো।
৩. ঘর থেকে বের হওয়া মাত্রই বাতি নিভিয়ে ফেলা। যখন ঘরে থাকবেন না তখন যে সব বৈদ্যুতিক যন্ত্র আপনি ব্যবহার করছেন না, তা বন্ধ রাখা। কারণ এতে কার্বন নিঃসরণ কম হয়।
৪. প্রত্যেক বাসায় নূন্যতম একটি এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করা। এ কাজে প্রয়োজনে অনুসন্ধিৎসু চক্রের সাথে যোগাযোগ করুন। একটি এনার্জি সেভিং লাইট তিন বছর ব্যবহার করলে সাধারণ লাইটের চেয়ে একটন কার্বন নিঃসরণ কম হয়। এতে অর্থেরও সাশ্রয় হয়।
৫. কাগজ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়া। কাগজের উভয় দিক ব্যবহার করা। যথাসম্ভব নিউজপ্রিন্ট কাগজ ব্যবহার করা। একাজে অন্যদের আহ্বান/উৎসাহিত করা।
৬. সম্পদের ব্যবহার যথাসম্ভব হ্রাস, পুনঃব্যবহার, পুনঃপ্রক্রিয়া করা । এ কাজে অন্যদের আহ্বান জানানো ও উৎসাহিত করা।
৭. বাসা-বাড়িতে যেখানেই সম্ভব পছন্দের গাছ লাগানো। এটি হতে পারে ঔষধি, ফলদ বা কোন ফুল/ফলের গাছ। এগুলো আমাদের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করে।
৮. যথা আগাছা পরিস্কার না করা। যদি আগাছা/বন্য গাছ/ছোট জঙ্গল/ঝোপ-ঝাড়/ ছাট জলাশয় আপনার ক্ষতির কারণ না হয়, তবে এগুলো সংরক্ষণ করা। কারণ এগুলো অসংখ্য প্রাণের খাদ্য ও বাসস্থান যোগায়।
৯. কিছুই ফেলা যাবে না। ঘরে রোজাকার কাজে ব্যবহৃত পুরনো বাতিল দ্রব্য ফেলে না দিয়ে তা কোথাও জমা রাখা এবং সম্ভব হলে পুনঃ ব্যবহার করা অথবা বিক্রি করা।
১০. এই মুহুর্ত থেকেই যথাসম্ভব পলিথিন ব্যাগ বর্জন করা এবং এর পরিবর্তে কাপড়, পাট বা চটের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ, কাগজের ঠোঙ্গা এবং বাঁশ ও বেতের সামগ্রী ব্যবহার করা। যা সহজেই পঁচনশীল এবং পরিবেশের কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে না।
১১. সর্বোপরি, অপচয় না করা - ভোগ কমানো, যা সত্যিকারের প্রয়োজন শুধুমাত্র তা-ই কেনা; যখনই এবং যা কিছু সম্ভব, তা-ই পুনঃব্যবহার করা, পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করা।
1 comment:
মাছগুলো সরিয়ে ফেলুন। কেমন যেন মেকি মেকি লাগে। দিতে হলে সত্যকার মাছের ভিডিও দিন।
Post a Comment