07 October 2010

দোয়েল -বাংলাদেশের জাতীয় পাখি

দোয়েল
দোয়েল মেরুদন্ডী প্রাণিদের মধ্যে প্যাছেরিফরম বর্গের অন্তর্গত একটি পাখি। ছোট পাখীদের মধ্যে দোয়েল পাখি অন্যতম। নানা রকম সুরে ডাকাডাকির জন্য দোয়েল সুপরিচিত। অস্থির এই পাখীরা সর্বদা গাছের ডালে বা মাটিতে লাফিয়ে বেড়ায়। কীট পতঙ্গ, ছোট ছোট শুঁও পোকা এদের প্রধান খাদ্য। এরা সারাদিন খাবারের খোঁজে ডাল থেকে ডালে নেচে বেড়ায়। কখনো কখনো সন্ধ্যার আগে আগে এরা খাবারের খোঁজে বের হয়। পুরুষ দোয়েল স্ত্রী দোয়েলকে আকৃষ্ট করার জন্য মিষ্টি সুরে ডাকাডাকি করে। তবে স্ত্রী দোয়েলও পুরুষ দোয়েলের উপস্থিতিতে ডাকতে পারে। এটি বাংলাদেশের জাতীয় পাখি।

প্রাপ্তিস্থান

নাতিশীতোষ্ণ দক্ষিণ এশিয়ায় মূলত: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশীয়া, মালয়েশিয়া, চীনের দক্ষিণাঞ্চল ও ফিলিপাইনে এদের পাওয়া যায়। সাধারণত কাঠসমৃদ্ধ বন, চাষাবাদকৃত জমির আশে পাশে ও জনবসতিতে মানুষের কাছাকাছি এদের দেখতে পাওয়া যায়।

সনাক্তকরণ

দোয়েল আকারে ১৫-২০ সেন্টিমিটার বা ৭ - ৮ ইঞ্চি লম্বা। এর লম্বা লেজ আছে যা অধিকাংশ সময় খাড়া করে রাখে। পুরুষ দোয়েলের শরীরের উপরিভাগ ও গলার নিচে কালো রঙের, পেট সাদা। ডানার দুই পাশে সাদা রঙের প্যাচ আছে। স্ত্রী দোয়েলের উপরিভাগ ও গলার নিচে ছাই-রঙা হয়। পেটের অংশ পুরুষ দোয়েলের মত উজ্জ্বল নয়, বরং কিছুটা ফিকে সাদা।

বংশবিস্তার

দক্ষিণ এশিয়ায় দোয়েলের প্রজননকাল মার্চ থেকে জুলাই; আর দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় জানুয়ারি থেকে জুলাই। প্রজনন সময় পুরুষ দোয়েলের শরীরের রঙ উজ্জ্বলতর হয়। গাছের ডালে বসে স্ত্রী দোয়েলকে আকৃষ্ট করার জন্য হরেকরকম সুরে ডাকাডাকি করে। ডিম দেয়ার এক সপ্তাহ আগে এরা গাছের কোটরে বা ছাদের কার্ণিশে বাসা বানায়। সাধারণত ৪/৫টি ডিম দেয়। ডিমের রং ফিকে নীলচে-সবুজ, তার উপর বাদামী ছোপ থাকে। স্ত্রী দোয়েল ডিমে তা দেয়; ৮ থেকে ১৪ দিন পরে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। প্রজনন কালে পুরুষ দোয়েল আগ্রাসী হয়ে ওঠে। তখন বাসার আশেপাশে অন্য পাখিদের আসতে দেয়না।



No comments: